বিশেষ প্রতিনিধিঃ সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) শর্ত ভঙ্গের দায়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ৪১৮ কোটি টাকা জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি এই টাকা জব্দ করা হয়েছে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘২০১৬ সালে ব্যাংকটি নির্ধারিত ১২ শতাংশ ঋণ বিতরণ সীমার চেয়ে আরও ৩ শতাংশ বেশি ঋণ বিতরণ করে জনতা ব্যাংক। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সম্প্রতি ব্যাংকটির ৪১৮ কোটি টাকা জব্দের সিদ্ধান্ত নেয়।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টাকা জমা করতে জনতা ব্যাংককে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৫ দিন। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার সমপরিমাণ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি। তবে এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে জনতা ব্যাংকের মতো ঘটনা না ঘটলেও রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। এতে খানিকটা বিব্রত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমওইউ খুব বেশি কাজ দিচ্ছে না। প্রতি তিনমাস পর পর ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠক হলেও কমানো যাচ্ছে না অনিয়ম ও দুর্বলতা। শুধু তাই নয়, সুশাসনের অভাবে দিন দিন অবনতির দিকেই যাচ্ছে ব্যাংকগুলো।বিশেষ করে গত তিন মাসে মূলধন ঘাটতি, খেলাপি ঋণ ও লোকসানি শাখা বেড়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এই পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমানও মনে করেন, ব্যাংক খাতের মধ্যে সবচেয়ে পেছনের সারিতে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। অগ্রণী ব্যাংকের ৫০০তম বোর্ড সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি উল্লেখ করেন, এই ব্যাংকগুলোতে শীর্ষ ২০ জনের কাছে দেওয়া হয়েছে মোট ঋণের ৫০ ভাগ ঋণ। অথচ এই অর্থগুলো আদায় হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আধুনিকায়নে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে সরকার। এর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এসব ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, পর্যাপ্ত মূলধন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, ঋণ বিতরণ, খেলাপি ঋণ আদায়, লোকসানি শাখা কমানোসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে প্রতি বছর এমওইউ সই হয়।